শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ কাজ

দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ কাজ

মতিহার বার্তা ডেস্ক :  দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ। বৃহৎ আকারের অত্যাধুনিক বোরিং মেশিনে চলছে বিরামহীন কর্মযজ্ঞ। এরমধ্যেই শেষ হয়েছে ৪৫ শতাংশ কাজ। অগ্রগতি সন্তোষজনক হওয়ায় নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই টানেল নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে আশা করছেন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। চীনের সাংহাইয়ের আদলে চট্টগ্রামকে ওয়ান সিটি টু টাউনে রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে স্বপ্নের এ প্রকল্প নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের বর্তমান চেহারা অনেকটা পাল্টে যাবে।

স্বপ্নের এক প্রকল্প কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল। দক্ষিণ এশিয়ায় এটাই প্রথম, যা নদীর দু’পাড়ের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করবে। প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়ে, সিটি আউটার রিং রোড, দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারার সঙ্গে সংযুক্তি, চীনা ইকোনমিক জোন, পারকি সমুদ্র সৈকত- সবমিলে সেই অপার সম্ভাবনা বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে এই টানেলের মধ্য দিয়ে। বদলে যাবে সামগ্রিক চিত্র, শিল্পায়ন ও আবাসনের পাশাপাশি বিকশিত হবে পর্যটন খাত।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন কর্ণফুলী টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তখনও এটা ছিল স্বপ্ন। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান-বাস্তব। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী টানেলের বোরিং উদ্বোধনের পর থেকে চলছে নিরবিচ্ছিন্ন কর্মযজ্ঞ। ছয়মাসে খনন হয়েছে টানেলের ৩৬০ মিটার। নদীর তলদেশে প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে চার থেকে ছয় মিটার টানেল। কাজ চলছে দিনরাত। চট্টগ্রাম মহানগর প্রান্ত থেকে শুরু হওয়া অন্ধকার এই সুড়ঙ্গ দক্ষিণপাড়ের আনোয়ারা প্রান্তে গিয়ে দেখবে আলোর মুখ। খুলে যাবে দক্ষিণ চট্টগ্রামে উন্নয়নের বিশাল সম্ভাবনা। গড়ে উঠবে শহর ও শিল্পায়ন। এদিকে এখনই জায়গা কিনে প্রস্তুত হয়ে আছেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন অনেক উদ্যোক্তা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কাজের অগ্রগতি বেশ সন্তোষজনক। যে গতিতে এগোচ্ছে তাতে করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে বলে আশা করছি। তিনি জানান, গত ছয় মাসে নদীর তলদেশে ৩৬০ মিটার বোরিং সম্পন্ন হয়েছে, যা মূল টানেলের ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তবে ভৌত অবকাঠামোসহ ধরলে পুরো প্রকল্পের ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রকান্ড মেশিনে চলছে বোরিং কাজ। নগরীর পতেঙ্গা পয়েন্ট দিয়ে শুরু হওয়া এ টানেল নদীর নিচ দিয়ে আনোয়ারা প্রান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টানেলের দু’প্রান্তে এপ্রোচ সড়ক হবে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার। প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই থাকবে উন্নত মান এবং নান্দনিকতার ছোঁয়া। কর্ণফুলীর দুপাশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি এ টানেল বড় একটি ধাপ এগিয়ে দেবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও দেশের পর্যটন শিল্পকে।

কর্ণফুলী নদীর মধ্যভাগে বঙ্গবন্ধু টানেল যাবে ১৫০ মিটার গভীরে। দুটি টিউবের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগর ও আনোয়ারার মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হবে। একটি টিউব দিয়ে যানবাহন যাবে, আরেক টিউবে ফিরবে। প্রতিটি টিউব হবে দুই লেনের। এছাড়া পৃথক তিনটি স্থানে দুটি টিউবের মধ্যে সংযোগ থাকছে। জরুরী প্রয়োজনে এক টিউব থেকে অন্য টিউবে গমনাগমনের জন্য এ ব্যবস্থা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল শহর প্রান্তের নৌবাহিনী কলেজের কাছাকাছি স্থান দিয়ে প্রবেশ করে বের হবে দক্ষিণ পাড়ের সিইউএফএল (চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড) সংলগ্ন ঘাট এলাকা দিয়ে। এ টানেল ঘিরে এখনই দক্ষিণ পাড়ে বেসরকারী বিভিন্ন খাতে শিল্পায়ন ও আবাসনের জন্য ভূমি উন্নয়নের কাজ লক্ষণীয়।

বাংলাদেশ ও চীনের জি টু জি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার এ প্রকল্পে। টানেল নির্মাণে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানির (সিসিসিসি) সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এ টানেলকে ঘিরে চীনের ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে দেশের সরকারের কাছে প্রস্তাব তুলে ধরার পরই। টানেল ও বন্দর সুবিধাকে বিবেচনায় নিয়েই চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চীনা ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

মতিহার বার্তা ডট কম – ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply